ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের পদ্ধতি ও খরচ / কিভাবে ট্রেডমার্ক করবেন?

ট্রেডমার্ক কি?

ট্রেডমার্ক হচ্ছে একটি মূল্যবান সম্পদ যা উত্তরাধিকার সূত্রে ভোগ এবং দখলে রাখা যায়।

আইনের দিক থেকে ট্রেডমার্ক হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট পণ্য বা




সেবাকে চিহ্নিত করা যায় এমন একটি স্বতন্ত্র চিহ্ন, ছবি, শব্দ, বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি যা উক্ত পণ্য বা সেবাটিকে সমজাতীয় অন্যান্য সকল পণ্য বা সেবা থেকে আলাদা করে। যেমন LUX এবং DOVE সাবান জাতীয় পণ্য হলেও ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডমার্ক থাকার কারণে পণ্য দুইটি ক্রেতাগণ আলাদা করতে সক্ষম হন। আবার iPhone বা Nokia আলাদা আলাদা ব্র্যান্ড বা ট্রেডমার্ক নির্দেশ করলেও উভয়ে সমজাতীয় পণ্য।

ট্রেডমার্কের অপর নাম ব্র্যান্ড। আপনি ব্র্যান্ড, ব্র্যান্ড নেম, ব্র্যান্ড ইমেজ, ব্র্যান্ডিং বা ব্র্যান্ড ভ্যালু শব্দ সমূহের সাথে পরিচিত। মূলত একটি পণ্য বা সেবার ব্র্যান্ড নেম হচ্ছে উহার ট্রেডমার্ক।

হিসাব বিজ্ঞানের ভাষায় ট্রেডমার্ক একটি অদৃশ্য সম্পদ যা কোন কোন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সম্পদ থেকেও অনেক মূল্যবান, যেমন এ্যাপলের ট্রেডমার্ক/ব্র্যান্ড ভ্যালু মোট সম্পদ মূল্যের ১৫% বা ১৪৬.৩ বিলিয়ন ডলার। একইভাবে সামস্যাং ট্রেডমার্ক/ব্র্যান্ড ভ্যালু মোট সম্পদের ২৮% বা ৯২.৩ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে আধুনিক আইনে ট্রেডমার্ক হচ্ছে একটি বুদ্ধি-ভিত্তিক সম্পদ যা আইনদ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও সুরক্ষিত। বিশ্বের প্রতিটি দেশ রাষ্ট্রীয় ভাবে আইনের মাধ্যমে ট্রেডমার্ক নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে।


আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
  • মার্ক/লোগো/ডিভাইসের নাম, প্রতিরূপ অথবা বিবরণ
  • আবেদনকারীর নাম
  • আবেদনকারীর ঠিকানা ও জাতীয়তা
  • আবেদনকারীর পদমর্যাদা (যেমন: মার্চেন্ডাইজার/কারখানার মালিক/সেবা প্রদানকারী/অন্যান্য)
  • মালামাল/সেবার সবিস্তার বিবরণী ও ধরণ
  • মার্ক ব্যবহারের তারিখ (তা বাংলাদেশে ব্যবহৃত হোক কিংবা ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত হোক)
  • সাধারণ/নির্দিষ্ট মোক্তারনামা (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি), যা পরবর্তীতেও নথিভুক্ত করা যায়।

একনজরে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া:
১. প্রাপ্যতা খোঁজ করা: ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করার আগে খুঁজে নিন যে ট্রেডমার্কটি ইতোমধ্যেই ব্যবহৃত কিংবা অন্য কারো দ্বারা রেজিস্টার্ড হয়ে গিয়েছে কি না।
২. আবেদন: DPDT থেকে আপনার রেজিস্ট্রেশন ফরম সংগ্রহ করুন এবং ঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিন।
৩. আবেদনের স্বীকারোক্তি: আবেদনের রসিদের উপর রেজিস্ট্রার সরকারি নথিভুক্তকরণ রসিদ ইস্যু করেন। ঐ ডকুমেন্টে ট্রেডমার্ক সম্পর্কিত যাবতীয় নথিভুক্ত বিবরণ থাকে, যেমন: আবেদন নম্বর, আবেদনের তারিখ, ট্রেডমার্ক ইত্যাদি।
৪. আবেদনপত্র যাচাই: আবেদনপত্র গ্রহণের পর রেজিস্ট্রার ২টি বিষয় যাচাই করে দেখেন: (ক) স্বাতন্ত্র্যসূচক বৈশিষ্ট্য এবং (খ) আইনের দাবীর সাথে সাধারণ সম্মতি।
৫. স্বীকৃতির চিঠি: যদি আবেদনপত্রটি সব দাবীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তখন রেজিস্ট্রার ঐ মার্কটির বিরোধিতা প্রাপ্তির জন্য ট্রেডমার্কস জার্নালে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য একটি স্বীকৃতির চিঠি ইস্যু করেন। নতুবা, রেজিস্ট্রি আপত্তি সংক্রান্ত লিখিত জবাব চেয়ে আপত্তি উত্থাপন করেন।
৬. আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান: বিভিন্ন কারণে আপনার আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে। তবে যাই হোক, যখন এটা ঘটবে আপনি অবশ্যই তিন মাসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব দিবেন এবং এই বিষয়ে শুনানির আবেদন করবেন, তা না হলে আপনার আবেদনপত্র পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
৭. আবেদনপত্র গ্রহণ: যদি পরীক্ষক আবেদনপত্র এবং দাবীর প্রতি সন্তুষ্ট হন, রেজিস্ট্রার সেই মার্কটিকে ট্রেডমার্কস জার্নালে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য গ্রহণ করেন।
৮. বিরোধিতা: যখন ট্রেডমার্কটি বিরোধিতার জন্য ট্রেডমার্কস জার্নালে বিজ্ঞাপন দিবে, প্রকাশের তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে যেকোনো ব্যক্তি রেজিস্ট্রারের কাছে ফরম TM-5-এ বিরোধিতার নোটিস দিতে পারবে।
৯. রেজিস্ট্রেশন: যদি বিরোধিতার মেয়াদের মধ্যে কোন বিরোধিতা না আসে অথবা প্রতিপক্ষ যদি আবেদনকারীর পক্ষে স্থির অবস্থান নেয়, রেজিস্ট্রার তখন নির্ধারিত ফী গ্রহণ করে ঐ ট্রেডমার্কের জন্য রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করতে বাধ্য হবে।
১০. রেজিস্ট্রেশনের তারিখ: ট্রেডমার্কের রেজিস্ট্রেশনের তারিখ হবে নথিভুক্ত করার তারিখ।
১১. রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদের সময়কাল: একটি রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক প্রাথমিকভাবে নথিভুক্ত হওয়ার তারিখ থেকে সাত (৭) বছরের জন্য বৈধ হয় এবং এরপর প্রতি দশ (১০) বছর পরপর রেজিস্ট্রেশন পুনরাবৃত্তি করা যায়।
১২. প্রয়োজনীয় সময়: সবকিছু ঠিকঠাক চললে এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য এক থেকে দুই সপ্তাহের বেশি লাগা উচিৎ নয়। কিন্তু প্রায়শই এটা দীর্ঘায়িত হয়ে থাকে। DPDT-তে আপনাকে সবকিছুই ম্যানুয়ালি পূরণ করতে হবে। সুতরাং সময় বেশি লাগলে অপেক্ষা করুন এবং যদি আপনার কোন জরুরি অবস্থা থাকে তাহলে দ্রুত শুরু করুন।
১৩. খরচ: সবকিছুর উপর নির্ভর করে আসল খরচ দুই থেকে চার হাজারের বেশি হওয়া উচিৎ নয়; কিন্তু আপনার বাজেটে এর সাথে কিছু ‘স্পীড মানি’ গুণতে হবে। আমাদেরকে দোষারোপ করবেন না; এই অনিয়মগুলো দূর করার জন্য আপনারও দায়িত্ব আছে। এরপর যখন আপনার কাছে কেউ অতিরিক্ত অর্থ চাইবে, তখন নাছোড়বান্দা হোন এবং এটা বন্ধ করার জন্য যতদূর যেতে হয় যেতে থাকুন।

ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের সকল ফরম ডাউনলোড লিংক- 👉 http://www.dpdt.gov.bd/site/page/2f989f9a-4a13-42c1-9187-8d1a90f5728b/%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A1%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%B8


ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনে যে কোন সহায়তা পেতে - আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন,

🔰 ঠিকানা 🔰💥Uttara Consultant Firm, House#2, 1st Floor, Road#13/B, Sector#10, Uttara Model Town, Dhaka-1230 (Opposite Side of Sunbeams School)
🔰✔যোগাযোগঃ +8801722-999252 (WhatsApp)
+8801974488801 (Office)
আপনাদের সেবায় আমরা নিয়োজিত⭕

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

BSTI-বিএসটিআই লাইসেন্স করার নিয়ম এবং লাইসেন্স নবায়ন ও প্রত্যাহার সংক্রান্ত পদ্ধতি।

বিন BIN Certificate কি? কিভাবে করবেন?